স্বদেশ ডেস্ক:
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার দুপুরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উত্তরার বাসা থেকে জাতীয়তাবাদী হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক দলের আয়োজিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক দলের উদ্যোগে করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের কর্মসূচি হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধমূলক ‘আর্সিনিক এলবাম-৩০’ ও ‘ব্রায়ানিয়া এলবাম-৩০’ কয়েক‘শ মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।
চিকিৎসক দলের সভাপতি ডা. আরিফুর রহমান মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শফিকুল আলম নাদিমের পরিচালরায় সহসভাপতি মশিউজ্জামান পান্নু, মজিবুল্লাহ মুজিব, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম জাকির হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী নিজাম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজকে যে একটা গাইডলাইন দেবেন, সেই গাইডলাইনও তারা দিতে পারে নাই। গোটা বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করার জন্য যে একটা ম্যাপ, রোড ম্যাপ, একটা পরিকল্পনা, একটা প্রতিরোধ পরিকল্পনা তার সবটাই অনুপস্থিত এখানে। আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে চীনা বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন, তারা এসে ঠিক একই কথা বলেছেন যে, বাংলাদেশে সব কিছু এলোমেলো। এখানে কোথায় রোগ আছে সেটাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ তারা (সরকার) চিহ্নিত করতে পারছেন না এবং সেটাকে চিহ্নিত করবার জন্য কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই।‘
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারের যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং গোটা হেলথ সিস্টেম একেবারে ভেঙে পড়েছে, একেবারেই লেজে গোবরে অবস্থা হয়ে গেছে। সরকার স্বাস্থ্যখাতে চরম অবহেলা করার জন্য, তাদের উদাসিনতার জন্যে কোভিড-১৯ এরপর থেকে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কারণে, ভ্রান্ত নীতির কারণে আজকে দেশে সবচেয়ে করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখানে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের তরফ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আছেন। তারা এক সময়ে একেক রকম কথা বলছেন। আমাদের স্থানীয় সরকারের ঢাকা সিটির নর্থের মেয়র গতকাল বলেছেন যে, আর কাল বিলম্ব না করে এখন রেড জোন ভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আপনি দেখুন কতটা অসামঞ্জস্যহীনতা হলে, কতটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে অনেক আগেই বলা হয়েছে যে, দেশে রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রীন জোন করা হবে। ঢাকা শহরের রেড জোন করে কত অঞ্চল ভাগ করে একদম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে লকডাউন করবেন। একমাত্র রাজাবাজার ছাড়া কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার মনে হয়, সরকার জানেও না তারা কী করবেন, কী করতে চাচ্ছে।’
করোনা মোকাবিলায় সরকারের দেওয়া প্যাকেজ প্রণোদনার প্রসঙ্গ টেনে মহাসচিব বলেন, ‘সেটা মূলত ছিল ব্যাংক ঋণ। এই মুহূর্তে সরকারের বড় যে বিষয়টা গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল, সেটা হলো মানবিক দিকটা। এখানে যে মানুষগুলো আজকে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে, লকডাউনের কারণে, সাধারণ ছুটির কারণে যারা কর্মহীন হয়ে পড়ছে অথবা যারা আজকে কাজ পাচ্ছে না তাদের ন্যূনতম বেঁচে থাকার জন্য যে প্রয়োজন, সেই প্রয়োজনের টাকাও সরকার তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। আপনার দেখেছেন, মাত্র আড়াই হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর একটা অনুদান ৫০ লক্ষ মানুষকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি দলীয়করণ করার ফলে যারা পাওয়া উচিত ছিল তারা পায়নি। সেটাও মাত্র এককালীন।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্যাকেজ প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ করে তাতে সরকার কোনো সাড়া না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।